হাওজা নিউজ এজেন্সি: আপনার জীবন কি উত্থান-পতনে ভরা?
পালিয়ে না গিয়ে, এই ওঠানামাগুলোকেই হোক আপনার উত্তরণের সোপান!
আমরা অনেক সময় দুঃখ, ভয়, ক্লান্তি বা হতাশায় ভুগি। এই অবস্থায় মানুষ সাধারণত তিনভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।
প্রথম দল – তারা অতিমাত্রায় ভাবনায় ডুবে যায় এবং বারবার নিজেকে প্রশ্ন করে, “কেন আমি এমন অনুভব করছি?”
দ্বিতীয় দল – নিজেদের ব্যর্থতার ভয় থেকে বিরত রাখতে অনর্থক কাজ বা বিনোদনের মধ্যে ডুবে থাকে।
তৃতীয় দল – এই অবস্থায়ও তারা নিজের লক্ষ্য অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ করে যেতে থাকে।
প্রথম দলের মানুষ ভাবেন, সবকিছুর মূল কারণ খুঁজে পেলে মনের অবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এটা সত্য নয়। যখন আমাদের মেজাজ খারাপ থাকে, তখন চিন্তাও নেতিবাচক হয় এবং আমরা আরও খারাপ লাগার দিকগুলোই বেশি মনে রাখি। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। তাই এমন অবস্থায় শুধু বসে বসে ভাবা বা বিশ্লেষণ করাটা উপকারের বদলে ক্ষতিকর হতে পারে।
এই জন্যই পরামর্শ হচ্ছে—নেতিবাচক আবেগে ডুবে না থেকে বরং ইতিবাচক কার্যকলাপ শুরু করুন। বিশ্লেষণ পরে করুন, যখন মনের অবস্থা ভালো থাকবে।
এখনই উঠে পড়ুন, আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী একটি ভালো কাজ শুরু করুন। কাজটি যত ছোটই হোক না কেন, আপনি খেয়াল করবেন—আপনার মনের অবস্থা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় দলের মানুষ যারা নেতিবাচক অনুভূতি থেকে পালাতে ওয়েব ব্রাউজিং, ভিডিও গেম বা সামাজিক মাধ্যমে সময় কাটায়, তারা সমস্যাটিকে সাময়িকভাবে ভুলে থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু যখন বাস্তব জীবনে ফিরে আসে, তখন সমস্যাগুলো আগের মতোই রয়ে যায়—বরং আরও বড় হয়ে ফিরে আসে।
এমনকি কখনও কখনও আমরা ভেবে নিই—কাজ এড়িয়ে চলা বা পিছিয়ে দেওয়া কিছুটা স্বস্তি দেয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি আমাদের মানসিক অবস্থাকে আরও খারাপ করে তোলে।
তাই নেতিবাচক অনুভূতির মুখোমুখি হোন, পালাবেন না।
এই বাস্তবতা গ্রহণ করুন—জীবনে ওঠানামা থাকবেই। এই ওঠানামা পার হয়েই আমরা আরও দৃঢ় ও পরিণত হই।
এই অনুভবের সময়টিকেই নিজের শক্তি অর্জনের মোক্ষম সময় হিসেবে নিন। দেরি না করে এখনই হাতে থাকা কাজগুলো ধরুন।
হ্যাঁ, কাজ শুরু করা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু একবার শুরু করলে দেখবেন, ধীরে ধীরে মনের ভার হালকা হচ্ছে।
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেন,
إِیَّاکَ وَ اَلْکَسَلَ وَ اَلضَّجَرَ فَإِنَّهُمَا مِفْتَاحُ کُلِّ سُوءٍ
“অলসতা ও ক্লান্তিভাব থেকে নিজেকে বাঁচাও, কেননা এ দু’টি প্রতিটি অকল্যাণের চাবিকাঠি।”
আপনার দায়িত্ব ও কর্মসূচিতে অবিচল থাকুন—এমনকি যদি মন খারাপও থাকে। মেজাজের ওঠানামাকে নিজের কাজের বাধা হতে দেবেন না।
সূত্র: রাহায়ে আজ তাসভীফ (অহেতুক বিলম্ব থেকে মুক্তি); পৃষ্ঠা- ৪৬
আপনার কমেন্ট